চোখ-মুখে অজানা ভয়, আতঙ্ক । কিছু বললেই অঝোরে কাঁদতেন । এভাবেই কেটেছে গোটা এক সপ্তাহ । অবশেষে ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের (West Bengal Radio Club)উদ্যোগে, চেষ্টায় পরিবারের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হলেন নেপালি যুবক । মঙ্গলবার তাঁর পরিবারের কাছে ফিরে যান ওই যুবক । উল্লেখ্য, সম্প্রতি, বারুইপুর (Baruipur News) স্টেশন রোডের কাছ থেকে রক্তাক্ত, আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল ।
জানা গিয়েছে, কমল বিকে নামে ওই যুবককে উদ্ধার করেছিলেন স্থানীয় এক মহিলা । তাঁর স্টেশন রোডেই দোকান । প্রথমে তিনি কমলের চিকিৎসা করান । তারপর তাঁকে বাড়ি নিয়ে যান । কিন্তু, কমল তাঁর নিজের পরিচয় দিতে পারেননি । ওই যুবককে তাঁর পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগ নেয় বেঙ্গল রেডিও ক্লাব । তাঁরা নেপালেই এমনই আরেকটি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন । কমলের পরিচয় জানতে পারেন । আর এদিন, কমলকে নিজের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেন তাঁরা ।
ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস বলেন, "আমরা খুশি যে তিনি অবশেষে বাড়িতে যাচ্ছেন।"
আরও পড়ুন, Artificial Intelligence : সঙ্গী আপনাকে ঠকাচ্ছে কিংবা অন্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে ? বলে দেবে এআই !
জানা গিয়েছে, সপ্তাহখানেক আগে বারুইপুর স্টেশন রোডের কাছে এক যুবককে রক্তাক্ত অবস্থায় বিভ্রান্ত হয়ে রাস্তায় দৌড়াদৌড়ি করতে দেখেন রুনু হাওলাদার । স্টেশন রোডের উপর একটা ইমিটেশনের দোকান রয়েছে রুনুর । সেখানে যাওয়ার সময় ওই যুবকটিকে দেখেন তিনি । সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যান, তাঁর চিকিৎসা করান, এরপর নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি । তারপর তাঁর পরিচয় জানার চেষ্টা করেন তাঁরা । কিন্তু, কোনও কথাই বলতে পারছে না যুবকটি । অঝোরে কেঁদে চলেছেন আর ব্যথার জায়গাগুলি দেখাচ্ছেন । ক্ষতগুলি দেখে মনে হবে যেন কেউ তাঁকে অমানবিকভাবে মারধর করেছে ।
এরপর যুবককে বাড়ি ফেরাতে উদ্যোগ নেন বেঙ্গল রেডিও ক্লাব । তাঁরাও ওই যুবককে দফায় দফায় নানা প্রশ্ন করেন l কিন্তু, কোনও কথাই বলতে পারছিলেন না তিনি l শুধু নেপালি কিছু শব্দ বলছিলেন । প্রাথমিক ভাবে তাঁরা বুঝতে পারেন যুবকটি বধির নয় l কোন অজ্ঞাতকরণে কথা বলতে অপারক তিনি l
এরপর শুরু হল খোঁজ । জানা গেল, ছেলেটির নাম কমল বি কে । মায়ের নাম জুনা বি কে । বাবা ট্যাপ বাহাদুর বি কে l প্রায় তিন বছর আগে বাড়িতে রাগারাগি করার পর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় ছেলেটি l সব খোঁজ পাওয়ার পর ভিডিও কলে ওই যুবকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলানো হয় । কিন্তু, কমল তখনও কিছু বলতে পারেননি, শুধু কেঁদে গিয়েছেন ।
নেপালে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরা কমলকে ফিরিয়ে আনতে দ্রুত পদক্ষেপ করেন । এদিন প্রায় তিন বছর পর পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন কমল ।