প্রেসিডেন্সি জেলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) এখন কয়েদি নম্বর ৯৪৩৭৯৯। সূত্রের খবর, গত কয়েক দিনে তাঁর পা কিছুটা ফুলে গেছে। পার্থ এখন যে ওয়ার্ডে রয়েছেন সেখানে দণ্ডিত ও বিচারাধীন বন্দিদের জন্য একটিই বাথরুম। কিন্তু পা ফোলায় সেল থেকে বেরিয়ে সেখানে যেতে পারছেন না প্রাক্তন মন্ত্রী। পার্থর পা ফোলার বিষয়টি জেল কর্তৃপক্ষের তরফে চিকিৎসকদের নজরে আনা হয়েছে। তবে চিকিৎসকেরা রবিবার সকালে পার্থর শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করলেও তাঁকে জেল হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেননি।
চিকিৎসকদের বক্তব্য, হাঁটাচলা কমে গিয়েছে বলে পায়ে ফোলা ভাব দেখা যেতে পারে, বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে । উল্লেখ্য, জেলের নিয়ম অনুযায়ী স্নান করার জন্য বিচারাধীন ও সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের একই শৌচালয় ও স্নানঘর ব্যবহার করতে হয়। প্রেসিডেন্সি জেলের ‘পহেলা বাইশ’ ওয়ার্ডের দু’নম্বর সেলে ঠাঁই হয়েছে পার্থের এবং ওই ওয়ার্ডের সব বন্দির স্নানের জন্য যে একটি মাত্র শৌচালয় রয়েছে। শুক্রবার জেলে আসার পর থেকে সেখানে গিয়ে তাঁর স্নান করা হয়ে ওঠেনি। তাঁর সেল থেকে বেরিয়ে একটু হেঁটে ওই চানঘরে যেতে হয়। রবিবার তিনি ঠিক ভাবে হাঁটাচলা করতে পারছিলেন না বলে জানান চিকিৎসকদের। তাই তাঁর ওয়ার্ডের সামনে একটি বড় ড্রামে জল দেওয়া হয়। সেই ড্রাম থেকে প্লাস্টিকের মগে জল তুলে প্রাক্তন মন্ত্রী এ দিন কোনও রকমে স্নান সারেন। একটি অতিরিক্ত তোয়ালে দেওয়া হয়েছে তাঁকে।
জেল সূত্রের খবর, দুপুরে স্নানের জন্য পার্থ যখন সেলের বাইরে আসেন, সেই সময় ওয়ার্ডের অন্যান্য সেলের বন্দিদের তাদের কুঠুরিতে আটকে রাখা হয়। শুধু এ দিন স্নানের সময়েই নয়, পার্থকে যখনই ওয়ার্ডের বাইরে আসার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে, তার আগে ওয়ার্ডের অন্য বন্দিদের ঘরের ভিতরে বন্ধ করে রাখা হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টা নজরদারির জন্য পার্থের সেলে একটি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। স্নানের সময়টুকু ছাড়া সকাল থেকে সন্ধ্যা তিনি ওয়ার্ডের ভিতরেই ছিলেন। ওই ওয়ার্ডের বিভিন্ন সেলে আছে আফতাব আনসারি ও মুসার মতো হাইপ্রোফাইল দণ্ডিত বন্দি। আছেন ছত্রধর মাহাত এবং একাধিক মাওবাদী বিচারাধীন বন্দিও।
জেলের খবর, মন্ত্রী প্রায় সারা দিনই ঘুমিয়েছেন। চিকিৎসকদের পরিদর্শনকালে, স্নানের আগেও তিনি অঘোরে ঘুমোচ্ছিলেন। সকালে তাঁকে দেওয়া হয় মাখন-টোস্ট বিস্কুট। জেলের নিয়ম অনুযায়ী রবিবার আমিষ খাবারের ব্যবস্থা ছিল। দুপুরে ভাত, ডাল, তরকারি ও মাছের ঝোল খেয়েছেন পার্থ। রাতেও ভাত দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন তিনি।
তবে জেল সূত্রের খবর, ভুবনেশ্বর এইমস তাঁর জন্য যে-খাদ্যতালিকা স্থির করে দিয়েছে, তা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলা হচ্ছে।অন্যদিকে, আলিপুর মহিলা জেল সূত্রের খবর, এ দিন সেখানে দিনের বেশির ভাগ সময়ই ঘুমিয়ে কাটিয়েছেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। সেখানেও সকালে খাবার বলতে ছিল চা-বিস্কুট মাখন-টোস্ট। দুপুরে ভাত, ডাল, তরকারি ও মাছ খেয়েছেন অর্পিতা। তাঁকেও আলাদা একটি সেলে রাখা হয়েছে এবং আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সর্বক্ষণ কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে তাঁর জন্য।