আক্ষরিক অর্থেই জলছবি। দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন কোনও বানভাসী নদী। যেখানে ডুব দিয়েছে গাড়ি। কাছে এলে ভুল ভাঙবে। না এটা মিসিসিপি নয়। এটা এই বাংলার দুর্গাপুর। কিন্তু এমন কেন অবস্থা ? এই অবস্থা কারণ, বুধবার রাতের নিম্নচাপের বৃষ্টি। আর তাতেই বানভাসি দুর্গাপুর পুরসভার তিনটি ওয়ার্ড।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যায় আকাশ ভেঙে বৃষ্টি হয়েছে দুর্গাপুরে। তার সঙ্গে পড়েছে বাজ। মূলত দুপুর থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। সময় বাড়ার সঙ্গে বৃষ্টির দাপট বাড়তে থাকে। লক্ষ্মীপুজোর সন্ধ্যায় এই দুর্যোগ দেখে তাঁরা রীতিমতো থতমত খেয়ে যান। পুজোর দিন দীর্ঘ সময় বাড়িতে আটকে থাকতে হয় তাঁদের। বাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখেন রাস্তায় প্রায় এক বুক জল। এরপরেও রেহাই মেলেনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রাতভর আরও দাপটের সঙ্গে বৃষ্টি হয়।
এদিন সকালে দেখা যায় দুর্গাপুরের পুর অঞ্চলের ২৪ এবং ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কার্যত বানভাসি। এর মধ্যে দুর্গাপুরের অন্যতম উচু অঞ্চল তপোবন। রাতভরের বৃষ্টির জেরে এই অঞ্চলের ছয় থেকে আটটি গাড়ি ডুবুডুবু হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। দুর্গাপুরের এই জলের ছবি এখন ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেউ কেউ দাবি করছেন, জলের এমন ছবি হ্যারিকেনের মতো দুর্যোগ এলে দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু দুর্গাপুরের এই অবস্থা কেন ?
গত দু বছর আগে শেষ হয়ে গিয়েছে দুর্গাপুর পুরসভার মেয়াদ। তারপরেও নির্বাচন হয়নি। কেন হয়নি, সেটাই প্রশ্ন স্থানীয় বাসিন্দাদের। অভিযোগ, সরকারি গড়িমসিতে লাল ফিতের ফাঁসে আটকে রয়েছে পুরসভার নির্বাচন। যদিও স্থানীয়দের এই অভিযোগ মানতে নারাজ রাজ্য।
এই ঘটনার পর দুর্গাপুর পুর নিগমের বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, শহরের নীচু এলাকায় জল ঢুকেছে, জল নামলে পুরসভার প্রতিনিধিরা এলাকায় যাবেন। তবে, শহরের নীচু এলাকা গুলির নিকাশি নিয়ে বরাবরের মত সমস্যা বহু বছরেও দূর হয়নি আজও এই প্রশ্ন তুলছে জলমগ্ন এলাকার বিপর্যস্ত মানুষজনেরা।
কতদিন এই অবস্থা চলবে, তা জানেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। কারণ, আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় নিম্নচাপের জেরে রাজ্যে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি চলবে। হাওয়া অফিসের এই খবরে আরও সিদুরে মেঘ দেখছেন দুর্গাপুর পুরসভার এই দুই ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। অভিযোগ, তাঁদের পূর্ব অভিজ্ঞতা বলছে নতুন করে ভারি বৃষ্টি না হলে এই জল কবে নামতে দীপাবলি গড়িয়ে যাবে।