চিকিৎসার জন্য ১০ বছরের ছেলে সুমন ও নিজের ভাইকে নিয়ে ভেলোরে গিয়েছিলেন পুরুলিয়ার অর্চনা পাল। চিকিৎসা সেরে বাড়ি ফিরে আসার জন্য উঠেছিলেন যশবন্তপুর-হাওড়া হামসফর এক্সপ্রেসে। শুক্রবার সন্ধে সাতটা নাগাদ ওড়িশার বাহানাগ বাজার স্টেশনের কাছে হামসফর এক্সপ্রেসের দুটি বগি বেলাইন হয়ে যায়। তারপর থেকে নিজের সন্তান ও ভাইকে খুঁজে পাচ্ছেন না অর্চনাদেবী। 'বাবু, ফিরে আয়' বলতে বলতে ক্রমাগত অচৈতন্য হয়ে পড়ছেন। পুরুলিয়ার হুড়ার হাটতলা বাজারে অর্চনা পালের বাড়িতে কার্যত ঝড়ের পরের নিস্তব্ধতা। কেউ জানে না আর ফিরে পাওয়া যাবে কি না সুমন ও সঞ্জয়কে। তবু, অপেক্ষা রয়েছে। রয়েছে ক্ষীণ আশাও। অর্চনা পালের শ্বশুর অনিল পাল বালেশ্বর মেডিক্যাল থেকে ভদ্রক মেডিক্যাল- সব জায়গাতেই উদভ্রান্তের মতো খুঁজে চলেছেন নিজের নাতিকে।
শুক্রবারে বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনার পর এই শোক-ছবি বাংলার বহু ঘরে ঘরে। দুর্ঘটনায় নিখোঁজ নিকটাত্মীয়দের খুঁজতে হাসপাতালের পর হাসপাতাল চষে বেড়াচ্ছেন অসহায় মানুষ। কারও কারও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে। বেশিরভাগেরই কোনও খোঁজই নেই। এর মধ্যেই নেপথ্যে ভেসে থাকে শোকগ্রস্ত মায়ের অসহায় প্রশ্ন- 'কোথায় আছিস বাবু'?..