বাংলায় (West Bengal) গত বিধানসভা ভোটের (Asembly election result) ফল প্রকাশ হয়েছিল গত ২ মে। রাজ্য রাজনীতি তো বটে ওইদিন গোটা দেশের নজর ছিল একটাই কেন্দ্রের দিকে। আর তা ছিল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম (Nandigram)। কারণ টক্কর ছিল বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে বিজেপি (Bjp) নেতা শুভেন্দু অধিকারীর। ঠিক কী হয়েছিল নন্দীগ্রামের ফল ? ২ মে পরবর্তী সময় থেকে এখনও পর্যন্ত তা নিয়ে আগ্রহ রাজ্যবাসী। খোলা চোখে দেখলে, ওই বিধানসভা আসন থেকে জিতে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দল নেতা হয়েছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendhu Adikari)। কিন্তু শনিবার কলকাতায় সেই ফল নিয়ে আরও একবার বিতর্ক উসকে দিলেন বিজেপি থেকে তৃণমূল ফেরত দুই নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee) এবং জয়প্রকাশ মজুমদার (Jayprakash Majumder)। তাঁদের অভিযোগ, শুভেন্দু নয়, আসলে ওই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। কিন্তু শুভেন্দুর কারসাজিতে তাঁকে হারতে হয়েছিল। এদিন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, শুভেন্দু নাকি পরাজিত হয়েছিল, তা নিজে মুখেই নাকি তাঁর কাছে স্বীকার করেছিলেন শুভেন্দু। ডোমজুড়ের প্রাক্তন বিধায়কের এই দাবিকে প্রবল ভাবে এদিন সমর্থন করেছেন সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারও।
ঠিক কী বলেছেন রাজীব ? রাজীব বলেছেন, ‘‘ভোটের দিন আমাকে ফোনে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন তিনি হেরে গিয়েছেন। কিন্তু পরে কী ভাবে তিনি জিতে যান, তা জানি না।’’ একইসঙ্গে জয়প্রকাশ যোগ করেন, ‘‘২ মে বিকেল ৫টায় আমি সাংবাদিক বৈঠক করে বলি মাননীয়া নন্দীগ্রামে জিতে গিয়েছেন। আমাদের প্রার্থী শুভেন্দু নন্দীগ্রামে পরাজিত হয়েছেন। কিন্তু পরে জানতে পারি অন্য ফল হয়েছে। শুভেন্দুকে আমি যখন বলি, তুমি তো হেরে গিয়েছিলে, আবার জিতলে কী ভাবে? জবাবে শুভেন্দু রহস্যময় হাসি হেসে বলেন, অনেক কিছু করতে হয়েছে।’’যদিও তৃণমূলের এই বিস্ফোরক অভিযোগের পর রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ও নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন : পঞ্জাব জয় জোগাচ্ছে বাড়তি অক্সিজেন, পশ্চিমবঙ্গর পঞ্চায়েত ভোটে এবার লড়াই করবে আপ
নন্দীগ্রামের ফল নিয়ে সম্প্রতি বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, নন্দীগ্রামে তাঁকে হারাতে আঁতাঁত করা হয়েছিল। তবে সেই সমঝোতা কারা করেছিলেন, সে বিষয়ে তাঁর ভাষণে বিস্তারিত কিছু বলেননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি শুধু বলেছিলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে যাঁরা ষড়যন্ত্র করেছিলেন, সেই ষড়যন্ত্রকারীদের উচিত এখন মানুষের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা!’’ তার পর আবার নন্দীগ্রাম বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিলেন রাজীব-জয়প্রকাশ। বিধানসভা ভোটে নিজের কেন্দ্র ভবানীপুর ছেড়ে নন্দীগ্রামে প্রার্থী হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নন্দীগ্রামের বিদায়ী বিধায়ক তথা বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু। ২ মে বিকেলে আচমকাই খবর চাউর হয়, নন্দীগ্রামে ১২০০ ভোটে জয়ী হয়েছেন মমতা। এমনকী, মমতা জয়ী হয়েছেন ঘোষণা করে টুইটও করে সংবাদ সংস্থা এএনআই। কিন্তু তার কিছু পরে নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে বিজয়ী ঘোষিত হন শুভেন্দু। নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দেয়, ১৯৫৬ ভোটে শুভেন্দু জিতেছেন। পরে বিষয়টি নিয়ে আদালতেও গিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন।
গত ৩ অক্টোবর ভবানীপুর উপনির্বাচনে জয়ী হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা সাংবিধানিক শর্তপূরণ করেছেন। কিন্তু তাতেও থেমে নেই নন্দীগ্রামের ফলাফল বিতর্ক।