সিঙ্গুর জমি আন্দোলনের সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর প্রয়াণে মর্মাহত হুগলির সিঙ্গুর। অনেকেই জানিয়েছেন, তৎকালীন সরকারের বিরোধিতা করলেও, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ছিলেন সৎ। তাঁর মৃত্যুতে শোক জ্ঞাপন করেছেন বেচারাম মান্না থেকে শুরু করে সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য।
বৃহস্পতিবার প্রয়াত হন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁর মৃত্যুর পর শোক জ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সহ অগণিত পার্টি সমর্থক এবং সাধারণ মানুষ।
সিঙ্গুরে টাটাদের কারখানা করা নিয়ে শুরু হয়েছিল আন্দোলন। দাবি ছিল অনিচ্ছুক চাষিদের জমি ফিরিয়ে দিতে হবে। অনিচ্ছুক কৃষকদের আন্দোলনে ফিরে যেতে হয়েছিল টাটাকে।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণে সেই সিঙ্গুর আন্দোলন নিয়েই এবার মুখ খুললেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। জানিয়েছেন, সিঙ্গুর থেকে টাটারা চলে যাওয়ায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কোনও দোষ ছিল না। পলিটব্যুরোর জন্যই সবকিছু ভেস্তে গিয়েছিল।
কী বললেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য?
তিনি বলেন, "জমি আন্দোলনের ক্ষেত্রে তাঁর সরকারের নীতি, দলের নীতির আমি বিরোধিতা করেছিলাম। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সততা, তাঁর নিষ্ঠা আমি ব্যক্তিগতভাবে শ্রদ্ধা করি। তিনি একটা সমঝোতার পথ খুঁজে বের করেছিলেন। তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর মধ্যস্থতায় সমঝোতা হয়েছিল। যেটুকু জমি স্বেচ্ছায় পাওয়া গিয়েছিল সেই জমিতেই শিল্প করবে টাটারা। এবং অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি ফেরত দেওয়া হবে। এরকম একটি চুক্তি হয়েছিল। বিরোধী দলনেতা হিসেবে বৈঠকে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে তাঁর দল যদি মেনে নিতেন তাহলে সিঙ্গুরে টাটার শিল্প হত। CPIM পলিটব্যুরো থেকে সেই চুক্তি মেনে হয়নি।"
অন্যদিকে সিঙ্গুর কৃষিজমি আন্দোলনের নেতা মহাদেব দাস জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জমি ফেরত দিলেও তা আর চাষের যোগ্য নয়। অল্প কিছু জমিতে চাষ হলেও সিংহভাগ জমিই পড়ে রয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার চেষ্টা করলেও কোনওভাবেই সেই জমি চাষ যোগ্য করা সম্ভব হয়নি।
ইচ্ছুক কৃষকদের একজন জানিয়েছেন, কারখানা হলে পুরো এলাকার উন্নতি হত। তাঁরা জানিয়েছেন এখনও কোনও শিল্পপতি এলে এখনও জমি দিতে ইচ্ছুক তাঁরা।