অদম্য় জেদ, মনের জোর আর ইচ্ছা শক্তি,সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে কিন্তু হার মানিয়ে দিতে পারে । সেটাই আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের বাসিন্দা রেণু খাতুন (Renu Khatun) । হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার আট দিনের মাথায় নার্সের চাকরিতে যোগ দিলেন রেণু (Renu Khatun joins as Nurse) । জীবনে এক নতুন অধ্যায় শুরু করলেন তিনি ।
মঙ্গলবার দুপুরে পূর্ব বর্ধমান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে নার্স (গ্রেড-টু) হিসাবেই কাজে যোগ দেন তিনি । ফুল দিয়ে রেণুকে সংবর্ধনা জানান স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা। এর পর তিনি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায়ের থেকে তাঁর কাজের দায়িত্ব বুঝে নেন। কাজে যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রেণু। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন। স্বাস্থ্য ভবন থেকে নতুন কোনও নির্দেশ না আসা পর্যন্ত রেণু আপাতত জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন প্রণব।
সম্প্রতি নার্সিংয়ের (Nursing) সরকারি চাকরির প্যানেলে নাম উঠেছে রেণু খাতুনের।২০২২, ৪ জুন । স্ত্রী হাতছাড়া হয়ে যাবেন, অভিযোগ, এই আশঙ্কা থেকে ঘুমের মধ্যে রেণুর হাত থেঁতলে কব্জি কেটে নেয় তাঁর স্বামী শেখ মহম্মদ। এই ঘটনায় শেখ মহম্মদ এবং তাঁর মা-বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এতকিছুর পরেও জীবন যুদ্ধে হার মেনে নেয়নি রেণু । ডান হাত আর কার্যকর নয় । তাই, হাসপাতালের বেডে শুয়েই বাঁ হাত লেখালিখি শুরু করেছিলেন । তাঁর চাকরি যাতে বজায় থাকে, সেই ব্যবস্থা নিতে নিজে উদ্যোগ নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এমনকি, তিনি আশ্বাস দেন তাঁর কৃত্রিম হাত বসানোর ও চিকিৎসার খরচের ব্য়বস্থা করবে রাজ্য সরকার। আজ ২১ জুন, ২০২২ । মাত্র ১৭ দিনের মাথাতেই উঠে দাঁড়িয়েছেন রেণু । নতুন করে লড়াইয়ের জন্য, নিজের স্বপ্নপূরণের জন্য তৈরি রেণু খাতুন ।