আজ বিশেষ দিন। একই সঙ্গে শোকের ও চ্যালেঞ্জের। অন্য় দিনগুলির তুলনায় একটু আগেই ঘুম থেকে উঠে পড়েছেন তিনি। তৈরি হয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে দেওয়ালে টাঙানো স্বামীর প্রমাণ মাপের ছবির সামনে দাঁড়িয়ে প্রণাম করলেন। আশীর্বাদ চাইলেন স্বামীর মৃত্যুর পর যে লড়াইটা তিনি শুরু করেছেন তাতে যেন সফল হন। তিনি মীনাক্ষী দত্ত (Minakshi Datta)। পানিহাটি পুরসভার (Panihati Municipality) ৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর অনুপম দত্তের স্ত্রী।
পানিহাটি পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনুপম এলাকায় জনপ্রিয় ছিলেন। গত পুরসভা ভোটেও তিনি ফের ওই ওয়ার্ড থেকে জেতেন। তারপরেই গত ১৩ মার্চ বাড়ির খুব কাছেই তাঁকে গুলি করে খুন করা হয়। অনুপমের খুনের পর খুব দ্রুত নিজেকে সামলে নিয়েছিলেন মীনাক্ষী। খুনের তদন্ত কত দূর এগলো সেই বিষয়ে নিয়মিত থানা—পুলিশ করার পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে শূন্য ওয়ার্ডে টিকিটের জন্য দরবার করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, এলাকায় প্রোমোটারি রাজ বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়ে তাঁর স্বামী দুষ্কৃতীদের চক্ষুশূল হয়েছিলেন। কাউন্সিলর হয়ে অনুপমের সেই উদ্যোগ তিনি চালিয়ে নিয়ে যেতে চান।
মীনাক্ষীর সেই দাবি মেনে তাঁকে এবার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে টিকিট দিয়েছে দল। আজ ভোটের দিন সকাল সকাল প্রার্থী মীনাক্ষী তাঁর ওয়ার্ডে কেমন ভোট হচ্ছে তা দেখতে বেরিয়ে পড়েন। অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদের মতো বুথে বুথে গিয়ে ভোট কেমন চলছে তার খোঁজখবর নেন। দলীয় কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। এরই ফাঁকে ভোট প্রক্রিয়া যাতে সুষ্ঠু ভাবে তার জন্য সবার কাছে আবেদন করেন। রাস্তার পাশে অনুপমের ছবির সামনে মোমবাতি জ্বালানোর পর আঙুল দিয়ে ‘ভি’ দেখিয়ে আত্মবিশ্বাসী মীনাক্ষী দাবি করলেন তিনিই জিতছেন।
উল্লেখ্য, অনুপমের মৃত্যুর পর এই ওয়ার্ডে ভোটের দিন নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসন কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না। ওয়ার্ডের ৩টি ভোট কেন্দ্রের ৭টি বুথেই দুই জন করে বন্দুকধারী পুলিশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া থানা ও ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের বাহিনী টহলদারি চালাচ্ছে। ওয়ার্ডে ভোটার রয়েছেন ৭ হাজার ৫৭৫ জন। মীনাক্ষী ছাড়াও এখানে লড়ছেন সিপিএমের প্রার্থী সুরজিৎ মুখোপাধ্যায়, কংগ্রেসের দীপক যাদব ও বিজেপির অরুণকুমার খাসনবীশ।