'আশ্বিনের শারদ প্রাতে বেজে উঠেছে আলোক-মঞ্জীর...।' মহালয়ায় (Mahalaya 2022) সেই অলৌকিক ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে চণ্ডীপাঠ (Chandipath)। বাঙালির কাছে সেই স্তোস্ত্র দুর্গাপুজোর আগমনী সুর। কিন্তু জেনারেশন ওয়াই কীভাবে দেখে মহালয়ার সেই চণ্ডীপাঠ! রেডিও শোনার নিয়মিত অভ্যাস বহু বছর ধরেই কমেছে, তবু বছরের ওই একটা দিন তাক থেকে নামিয়ে ধুলো ঝাড়ার রেওয়াজ-টুকু তো অন্তত ছিল। তাও ক্রমশ হারিয়ে আসছে।
অতীত বিস্মৃত আমরা ভবিষ্যতের কাছে রেখে যেতে পারছি না শেকড়ের এতটুকুও। এই অসময়েও ব্যাটনের হাতবদলের সেই প্রায় অসম্ভব লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছেন এক বাঙালি! কুঁদঘাটের সুপ্রিয় সেনগুপ্ত (Supriyo Sengupta)। এই প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় করে তুলতে 'মহিষাসুরমর্দিণীকে (Mahishasuramardini) অনুবাদ করছেন ইংরেজিতে। নেট দুনিয়ায় ইতিমধ্যে সাড়া ফেলেছে তা।
স্তোত্রের চলন পুঙ্খানুপুঙ্খ এক রেখে ইংরেজিতে করা সহজ কাজ নয়। তবু নিজের মতো করেই যুগোপযোগী করে তোলার চেষ্টা করেছেন যাদবপুরের প্রাক্তনী সুপ্রিয় বাবু। এডিটরজি বাংলাকে ফোনে জানালেন, "ছোটবেলা থেকেই পাড়ার দুর্গাপুজোয় চণ্ডীপাঠ করতেন। প্রশংসাও কুড়োতেন সকলের, কিন্তু তাঁর মায়ের ইচ্ছে ছিল, অনুকরণ নয়, অনুসরণ করে নিজস্ব কিছু তৈরি করুক তাঁর সন্তান।
২০১৭ সালে প্রাথমিক অনুবাদ করেছিলেন সুপ্রিয় বাবুর ইংরেজির শিক্ষক। প্রায় প্রতি বছর আসছে নতুন সংস্করণ। তবে এই কাজ তো একার কাঁধে শেষ করা সম্ভব নয়। সুপ্রিয়বাবু জানালেন, গান, ছন্দ, লয়- সব কিছুতে তাঁকে সাহায্য করেছেন তাঁর দীর্ঘদিনের বন্ধু সংযুক্তা চক্রবর্তী ও সুবীর চন্দ। অনুষ্ঠানের রূপায়ণে তাঁকে সাহায্য করেছেন অঞ্জন নন্দী, প্রবাল চক্রবর্তী ও সোমনাথ চক্রবর্তী। আর প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পাশে ছিলেন সুপ্রিয়বাবুর স্ত্রী জয়শ্রী সেনগুপ্ত ও তাঁর দুই মেয়ে ঈপ্সিতা ও জ্যোতিষ্মিতা।
আরও পড়ুন: এফডি ব্লকের শাপমোচনে পুজো শুরু সল্টলেকের
নতুন প্রজন্মের সঙ্গে কতটা সেতুবন্ধন করতে পারলেন! এডিটরজি বাংলাকে সুপ্রিয়বাবু জানালেন, "মায়ের অনুপ্রেরণায় কাজ শুরু করেছিলাম। কিন্তু কতটা করতে পারলাম, সময়ই বলবে।" ক্যানসারে মাকে হারিয়েছেন। সেটা একটা আফশোস।