হেয়ার স্কুলের প্রয়াত প্রধান শিক্ষক সুনীল কুমার দাসের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের তদন্ত চলছিল। বুধবার এই দাবি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর। প্রাক্তন প্রধান শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনাকে মর্মান্তিক অ্যাখা দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁর পেনশন না পাওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই ঘটনায় সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তাঁর অভিযোগ, এক শিক্ষারত্ন গত তিন বছর পেনশন পেলেন না, তাতে সরকারের কোনও হুঁশ নেই। সুজনের অভিযোগ, এর থেকেই প্রমাণিত রাজ্যে শিক্ষা আজ কোন জায়গায় গিয়েছে। এরজন্য়েও মুখ্যমন্ত্রীকেই দায়ী করেছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। বামেদের এই অভিযোগ উড়িয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, ২০২১ সাল থেকে সুনীল কুমার দাসের জন্য আপতকালীন পেনশন চালু করেছিল রাজ্য সরকার।
বর্ধমানের মেমারির রাজবাগান এলাকায় বাড়ি হেয়ার স্কুলের প্রাক্তন প্রধানশিক্ষক সুনীলকুমার দাসের। সেই বাড়ি থেকেই বুধবার উদ্ধার হয় তাঁর ঝুলন্ত দেহ। এ নিয়ে স্ত্রী সাধনা দাস জানান, ‘‘পেনশন না পাওয়ায় তিনি হতাশায় ভুগছিলেন। কী ভাবে সংসার চলবে তা নিয়ে উদ্বেগে ভুগছিলেন। অনেক চেষ্টা করেও কিছু হয়নি।’’ এ প্রসঙ্গে রাজ্য়ের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বক্তব্য, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখছি বিষয়টা। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। সুনীলকুমার দাসকে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে শিক্ষারত্ন দেওয়া হয়। ওই মাসেই উনি অবসর নেন। ওই মাসের ১১ তারিখ অর্থাৎ শিক্ষারত্ন পাওয়ার ছ’দিন পর ওঁর বিরুদ্ধে আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছিল। তার মধ্যেও ২০২১ সালে বিষয়টি যখন আমাদের কাছে আসে তখন আমরা ওঁর আপৎকালীন পেনশন চালু করি।’’
তাতেও অবশ্য চিড়ে ভেজেনি। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর অভিযোগ, রাজ্যের শিক্ষার অবস্থা ঠিক কোন পথে, তা প্রমাণ করল শিক্ষারত্নের আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা। পূর্ব বর্ধমানের মেমারির দেবীপুরের রাজবাগান এলাকার বাসিন্দা ছিলেন সুনীলকুমার দাস। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, নানা স্কুলে চাকরি করার পরে কলকাতার হেয়ার স্কুল থেকে বছর তিনেক আগে অবসর নেন তিনি। ২০১৯ সালে তিনি ‘শিক্ষারত্ন’ সম্মানও পান। বুধবার সকালে ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। সুনীলের মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমেছে এলাকায়।