আর পাঁচটা দিনের মতো সকাল থেকেই কর্মব্যস্ততা শুরু হয়েছিল এলাকায়। জনবহুল বেকবাগান এলাকায় আবার বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনের দফতর। ফলে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা বেষ্টনীতে মোড়া বাসিন্দাদের জীবন। সেখানেই প্রায় একঘণ্টা ধরে ইনসাস রাইফেল হাতে উর্দি পরে বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন এক পুলিশকর্মী৷ প্রথমে তা দেখে সন্দেহ হয়নি স্থানীয় বাসিন্দাদের৷ কারণ কাছেই তো বাংলাদেশ হাইকমিশনের দফতর।
তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই ভুল ভাঙে এলাকাবাসীর৷ প্রথমে এলাকারই একটি বাড়ির নীচে গিয়ে চিৎকার করেন ওই পুলিশকর্মী৷ এরপর লোয়ার রেঞ্জ রোডের মুখে এসে আচমকাই নিজের ইনসাস বন্দুক থেকে একের পর এক গুলি ছুড়তে শুরু করেন ওই পুলিশকর্মী৷ প্রথমে মাটির দিকে তাক করে, তারপর রাস্তা দিয়ে বাইকে চড়ে যাওয়া এক মহিলাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন ওই পুলিশকর্মী৷
অন্যদিকে, সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে গুলিবর্ষণের কিছুক্ষণ আগের ছবি। দেখা যায়, চোডুপ লেপচা রীতিমতো সমস্যায় রয়েছেন। অফিসের সিঁড়ি বেশ কয়েকবার হন্তদন্ত হয়ে ওঠানামা করতে দেখা যায় তাঁকে। এরপর দেখা যায় কাঁধে বন্দুক নিয়েই রাস্তায় বেরিয়ে যান ওই নিরাপত্তারক্ষী।
এদিকে, গুলির আওয়াজে মুহূর্তের মধ্যে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক৷ প্রাণভয়ে পালাতে শুরু করেন এলাকাবাসী এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরা৷ তখনও পর পর কানে আসছে গুলির শব্দ৷ প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, দু' থেকে তিনজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরই নিজের গলার নীচে গুলি করেন ওই পুলিশকর্মী৷ ঘটনাস্থলে থাকা কারও কারও দাবি, অন্তত ১৫ থেকে ১৬ রাউন্ড গুলি ছোড়েন ওই পুলিশকর্মী৷ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতেও লাগে গুলি, ভেঙে যায় কাচ৷
কয়েক মিনিট ধরে তাণ্ডব চলার পর গুলির আওয়াজ থামলে আস্তে আস্তে সাহস করে ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয়রা৷ দেখা যায় রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার উপরে পড়ে আছেন এক মহিলার দেহ৷ কিছুটা দূরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ওই পুলিশকর্মীর দেহ৷ ধীরে ধীরে ভয় কাটিয়ে রাস্তায় জমতে থাকে ভিড়৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বেনিয়াপুকুর থানার পুলিশ৷ যদিও ততক্ষণে সব শেষ।