রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিজেপিতে ফের ভাঙন। বাংলায় এই প্রথম কোনও বিজেপি বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিলেন। রবিবার কলকাতায় পদ্ম ছেড়ে ঘাসফুলে যোগ দিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। কেন এই অবস্থায় সুমনকে বিজেপি ছাড়তে হল, তার জন্য বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের থেকে রিপোর্ট চাইলেন সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। খুব দ্রুত এই রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে রাজ্যে ফের আদা-জল খেয়ে নামার নির্দেশ দিয়েছিলেন নাড্ডা। তারমধ্যেই রবিবার সুমনের বিজেপি ত্যাগ। সুমনকে বিশ্বাসঘাতক বলে অভিযোগ করে একাধিক টুইট করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। নাম না করে নিশানা করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তৃণমূলও পাল্টা জবাব দিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, তাতে জেপি নাড্ডাদের শান্ত করা যাচ্ছে না। কেন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে উত্তরবঙ্গের সংগঠন ভাঙল, তার জন্য জবাব তলব করা হয়েছে।
২০০ আসনে স্বপ্ন নিয়ে ২০২১ সালে বাংলার বিধানসভার ভোটের ময়দানে নেমেছিল বিজেপি। তাদের স্কোরবোর্ড থমকে গিয়েছিল ৭৭-এ। মাত্র দু বছরের মধ্যে তা এবার নেমে এল ৬৯-এ। ঘরওয়াপসির শুরুটা করেছিলেন মুকুল রায়। কিন্তু সুমন কাঞ্জিলালের তৃণমূলে যোগদানকে প্রকৃত বিজেপি বলেই অ্যাখা দিচ্ছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, গত ক'বছরে যাঁরা তৃণমূলে ফিরেছেন, তাঁরা সবাই তৃণমূল ছেড়েই বিজেপিতে গিয়েছিলেন। একমাত্র সুমন কাঞ্জিলাল যিনি এই প্রথম বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন। পেশায় সাংবাদিক সুমন সরাসরি যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। এই যোগদানের ঘটনায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, আইনি জটিলতা এড়াতেই তৃণমূল পতাকা ছাড়াই দলবদল করিয়ে নিচ্ছে। রাতে বিধানসভায় বিজেপির পরিষদীয় নেতা মনোজ টিগ্গা জানিয়েছেন, বহুবার চেষ্টা করেও তাঁরা সুমন কাঞ্জিলালের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি।
তাতেও অবশ্য দিল্লির কেন্দ্রীয় নেতাদের বাগে আনা যাচ্ছে না। কারণ, সুমন কাঞ্জিলালের দলবদলের ঘটনায় রিপোর্ট চেয়ে রাজ্য বিজেপিকে চাপে ফেলে দিয়েছেন সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। উল্টোদিকে, রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজনৈতিক তরজাও জমে উঠল প্রথম বিজেপি বিধায়কের দলবদলে।