পৌষ সংক্রান্তি মানেই পিঠে-পুলির উৎসব । আজকের দিনটা নতুন গুড়ের গন্ধে মঁ মঁ করে বাঙালির ঘর । পাটিসাপটা, দুধ পুলি থেকে চিতই পিঠে...হরেক রকমের পিঠে তৈরি হয় বাড়িতে বাড়িতে । তবে, সময় যত এগোচ্ছে, বাড়িতে পিঠে-পুলি তৈরির রেওয়াজ বা রীতি কমছে । পিঠে তৈরির ঝকমারি তো কম নয় । ব্যস্ত জীবনে অনেকেই সেই ঝামেলা নিতে চান না । তবে, পৌষ সংক্রান্তিতে পিঠে ছাড়া শুকনো মুখে বসে থাকবে বাঙালি, তাও নয় । কারণ এখন মিষ্টির দোকান হোক অনলাইন...অর্ডার দিলেই মিলছে দুধ পুলি, পাটিসাপটা । আর কর্মব্যস্ত জীবনে পিঠে বানানোর ঝকমারি থেকে দূরে থাকা গৃহস্থের বাড়িতে পিঠে খাওয়ার রীতি বজায় রাখছেন জলপাইগুড়ির স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মেয়েরা ।
গ্যারেজে পিঠে-পুলি তৈরির কারখানা
জলপাইগুড়ির ১৯ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর লোপামুদ্রা অধিকারীর ছোট্ট গ্যারেজ । সেখানেই দেখা গেল পিঠে বানানোর তোরজোর চলছে । কেউ বানাচ্ছেন পাটিসাপটা, দুধ পুলি, কারও হাতে তৈরি হচ্ছে মালপোয়া, রসবড়া ও গোকুল পিঠে । তাঁদের হাতে তৈরি পিঠে-পুলি যেমন বিক্রি হচ্ছে মিষ্টির দোকানে, বিক্রি হচ্ছে পাড়াতেও । এখানেই শেষ নয়, সোশ্যাল মিডিয়াতেও বিজ্ঞাপনের মধ্যে দিয়ে অনলাইনে ভালই অর্জার মিলছে ।
পিঠের চাহিদা
গোষ্ঠীর অন্যতম সদস্য ঝর্ণা সেন জানাচ্ছেন,প্রতিদিন অন্তত ৫০টি করে বরাত আসছে । বাড়িতে চাহিদা বেশি দুধ পুলি আর মুগ পুলির । আর দোকানে বেশ বিক্রি হচ্ছে মালপোয়া । পিঠে-পুলি তৈরি করে যেমন মানুষের রসনা তৃপ্তি করছেন, তেমনই এই পিঠে-পুলিই তাঁদের আর্থিক সুরাহা দিচ্ছে । পিঠে-পুলি বেঁচেই অনেকেই সংসার চালাচ্ছেন তাঁদের । জানা গিয়েছে, ছ'টি গোষ্ঠীর মেয়েরা রয়েছেন। অন্তত পঞ্চাশটি পরিবারের আয় হচ্ছে ।
গ্যারেজ কেন ?
জলপাইগুড়ি ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের পুর প্রতিনিধি লোপামূদ্রা অধিকারী জানান, বেশ কয়েক বছর ধরেই নিজেদের মতো করে একেবারেই ছোট করে পিঠে পুলি তৈরি করছিল গোষ্ঠীর মেয়েরা। ওদের জন্য একটি ঘর পুরসভার কাছে চেয়েছিলেন । কিন্তু পাওয়া যায়নি। তাই নিজের গ্যারেজই খুলে দিয়েছেন তাঁদের জন্য ।