বর্ডার গাভাসকর ট্রফির প্রথম টেস্ট জিতে আত্মবিশ্বাসী টিম ইন্ডিয়া। পার্থের সেই আত্মবিশ্বাস অ্যাডিলেডেও কাজে লাগাতে চায় ভারত। অনেকগুলো পটপরিবর্তন হয়েছে। এই টেস্ট হবে গোলাপি বলে। দিনরাতের টেস্ট। এই ফরম্যাটে অস্ট্রেলিয়া অন্যতম শক্তিশালী। গোলাপি বলের টেস্টে কোনও দিন হারেনি অজি ব্রিগেড। তার উপর প্রথম টেস্টে হেরে রীতিমতো ফুঁসছেন প্যাট কামিন্সরা। পার্থের হারের পর সমালোচনা শুরু করেছেন অজি কিংবদন্তীরা। তাই অ্যাডভান্টেজে রয়েছে টিম ইন্ডিয়াই। প্রথম টেস্টে জয়ের পর অ্যাডিলেডেও জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবছে না টিম ইন্ডিয়া।
পার্থে ২৯৫ রানে জিতে ইতিহাস তৈরি করেছেন জসপ্রীত বুমরারা। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন বুমরা নিজেই। প্রথম ইনিংসে ১৫০ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল ভারত। কিন্তু বুমরার দুরন্ত বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়াও প্রথম ইনিংসে ১০৪ রানে গুটিয়ে যায়। ৪৬ রানের লিড নিয়ে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে বড় রান আসে যশস্বী জয়সওয়াল, কে এল রাহুল, বিরাট কোহলির ব্যাটে। আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। অ্যাডিলেড ওভালে গোলাপি বলের টেস্টে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে ভারত। এই টেস্টের পিচেও বেশ কিছু বদল আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। গোলাপি বলের টেস্টে বিদেশের মাটিতে ভারতের রেকর্ড একেবারেই ভাল নয়। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতেই দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৩৬ রানে অলআউট হয়ে যায় টিম ইন্ডিয়া।
দ্বিতীয় টেস্টের আগে শনিবার প্রধানমন্ত্রী একাদশের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে নেমেছিল টিম ইন্ডিয়া। ক্যানবেরায় বৃষ্টিতে ৪৬ ওভারের ম্যাচ হয়। গোলাপি বলের সেই ম্যাচে ছন্দে দেখা যায় টিম ইন্ডিয়াকে। ওপেনিংয়ে নিজের জায়গা ছেড়ে দেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। পার্থে যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই শুরু করে কে এল রাহুল ও যশস্বী জয়সওয়াল। ৪৫ রান করেন যশস্বী জয়সওয়াল। কে এল রাহুল করেন ২৭ রান। চোট সারিয়ে তিন নম্বরে নামতে দেখা যায় শুভমান গিলকে। শুভমান প্রধানমন্ত্রী একাদশের বিরুদ্ধে হাফসেঞ্চুরি করেন। এই ম্যাচে খেলেননি বিরাট কোহলি ও জসপ্রীত বুমরা। চার নম্বরে নেমে রোহিতের ব্যাটে আসে মাত্র ৩ রান। নীতিশ কুমার রেড্ডি ও ওয়াশিংটন সুন্দর দুজনেই ৪২ রান করেন। ২৭ রান আসে রবীন্দ্র জাদেজার ব্যাটে। ৬ উইকেটে এই প্রস্তুতি ম্যাচ জিতে নেয় টিম ইন্ডিয়া।
শুক্রবার অ্যাডিলেডে শুরু দ্বিতীয় টেস্ট। কেমন হবে ভারতের প্রথম একাদশ? পার্থ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে রাহুল ও যশস্বী ২০১ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। তাই অ্যাডিলেডেও থাকবে এই ওপেনিং জুটি।চোট সারিয়ে প্রস্তুতি ম্যাচে খেলে হাফসেঞ্চুরি করেছেন শুভমান গিল। তিন নম্বরে তাঁকে রাখা হতে পারে। গত ম্যাচে দেবদূত পাড্ডিকল সফল হতে পারেননি। তাই গিলের তিন নম্বর জায়গা নিশ্চিত। প্রস্তুতি ম্যাচে চার নম্বরে রোহিত শর্মা নামলেও দ্বিতীয় টেস্টে এই পজিশন বিরাটেরই। এদিকে টপ অর্ডারে ছন্দ পাচ্ছেন না রোহিত শর্মা। তাই পাঁচে থাকতে পারেন তিনি। ছয়ে থাকবেন ঋষভ পন্থ ও সাত নম্বরে নীতিশ কুমার রেড্ডি।ভারতের বোলিং আক্রমণে কোনও পরিবর্তন হওয়ার কথা নয়। জসপ্রীত বুমরা ছন্দে আছেন। সঙ্গে থাকবেন আরও দুই পেসার হর্ষিত রানা ও মহম্মদ সিরাজ। একমাত্র স্পিনার ওয়াশিংটন সুন্দর।
প্রথম টেস্টে জিতে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে এক নম্বরে উঠেছে টিম ইন্ডিয়া। কিন্তু টিকে থাকতে গেলে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ৪-১ ব্যবধানে জিততেই হবে ভারতকে। ভারতের পরেই WTC ব়্যাঙ্কিংয়ে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তিন নম্বরে অস্ট্রেলিয়া ও চারে নিউজিল্যান্ড। প্রথম টেস্টে হারের পরই দুই নম্বর থেকে তিনে নেমে গিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ২০২৫ সালের জুনে লর্ডসে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। তাই বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে ভারতের বড় জয়ের উপর অনেকটাই নির্ভর করছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ব়্যাঙ্কিং। প্রথম দুটি টিমই ফাইনাল খেলবে। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে হোয়াইটওয়াশের পর অনেকটাই বড় ধাক্কা খেয়েছে ভারত। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বড় ব্যবধানে জয়ই ভারতকে ফের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে ফেরাতে পারে।