ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন। এবার সেই ইঙ্গিত সত্যি করে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করলেন দীনেশ কার্তিক। শনিবার দীনেশ কার্তিকের জন্মদিন। এদিনই নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় অবসরের কথা জানান দীনেশ।
আগেই আইপিএল থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছিলেন অভিজ্ঞ উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে আইপিএল এলিমিনেটর ছিল তাঁর শেষ ম্যাচ। এবার আইপিএল-সহ সব ফরম্যাট থেকেই অবসর নিলেন তিনি। ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম সেরা উইকেটকিপার দীনেশ কার্তিক।
দীর্ঘ ২০ বছরের ক্রিকেট জীবনে ভারতের হয়ে ২৬টা টেস্ট, ৯৪টা ওয়ান ও ৬০টা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন দীনেশ। ৩৯ বছর বয়সি তামিলনাড়ুর এই ক্রিকেটার ২০২২ সালের পর আর দেশের জার্সিতে খেলেননি। কিন্ত আইপিএলে দীনেশ পঞ্জাব, বেঙ্গালুরু, দিল্লি, কলকাতা, গুজরাত ও মুম্বইয়ের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
নিজের জন্মদিনে দীনেশ কার্তিক মাঠ ছাড়লেন ঠিকই, কিন্তু রেখে গেলেন হার না মানার গল্প। তাঁর ব্যক্তিগত জীবনকে 'জ্যায়সা ফিল্মোঁ মে হোতা হ্যায়...' বললেও হয়ত কম বলা হবে। একটা সময় নিজের ব্যক্তিগত জীবনের ওঠাপড়ার কারণে ক্রিকেট থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন দীনেশ। হারিয়েছিলেন রঞ্জি দলের অধিনায়কত্ব। শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন নিজেকে। কিন্তু সেই সবের থেকে বেরিয়ে ফের ফিরে এসেছিলেন ২২ গজে। কখনও ধারাভাষ্যকার, কখনও আবার জার্সি পরে মাঠে, সবেতেই নিজের দক্ষতার ছাপ রেখেছেন দীনেশ কার্তিক।
দীনেশ কার্তিক মাত্র ২১ বছর বয়সেই তাঁর ছেলেবেলার বন্ধু নিকিতা বানজারাকে বিয়ে করেছিলেন। সব ঠিকই চলছিল। নিকিতা ছিল দীনেশের ছায়াসঙ্গী। গ্যালারিতে প্রায় সবসময়ই দেখা যেত তাঁকে। কিন্তু ২০১২ সালে সবটা বদলে গেল। শোনা গিয়েছি ২০১২-তে বিজয় হাজারে ট্রফি খেলার সময় তিনি জানতে পারেন, তাঁর স্ত্রী নিকিতা প্রেমে পড়েছেন। তাঁরই বন্ধু মুরলী বিজয়ের। এই ঘটনা মেনে নিতে না পারেননি।
নিকিতার সঙ্গে ডিভোর্স হয় কার্তিকের। ক্রিকেট অনুশীলন বন্ধ করে দেন দীনেশ। তাঁর ফর্ম ক্রমাগত খারাপ হতে থাকে। তামিলনাড়ুর অধিনায়কত্ব হারিয়ে ফেলেন। ওই দলের নতুন অধিনায়ক হন মুরলী বিজয়। এর পর কার্তিকে জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেন স্কোয়াশ প্লেয়ার দীপিকা পাল্লিকেল।
দীপিকার চেষ্টায় কার্তিক ঘুরে দাঁড়ান। ফের ভারতের ওডিআই দলে নির্বাচিত হন। কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়কত্ব পান। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি দীনেশকে। দেশের হয়ে টানা খেলার সুযোগ হয়নি কার্তিকের। তবুও ভারতীয় ক্রিকেটে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। দেশের তিন ফরম্যাট ছাড়াও এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটারের ঝুলিতে রয়েছে ২৫৭টি আইপিএল ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাও।