আটকাতে হবে ১৭০ রান। প্রথম ওভারেই নাটক। একের পর ওয়াইড, সঙ্গে নো বল। স্কোর বোর্ডে ভেসে উঠল পাকিস্তান কোনও বল না খেলেই ৯ রান। দিলসন মদুশঙ্কার এই ওভারেও তখনও কিছু ঠের পাওয়া যায়নি। রাজনৈতিক অস্থিরতা, ভেঙে পড়া অর্থনীতি, অনুশীলনের জন্য ক্যাম্পে নয় বাড়ি থেকে মাঠে আসা, এক ফোঁটা তেলের জন্য পাম্পে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটানো। এই সব ঘটনা যেন ভুলিয়ে দিল রবিবাসরীয় দুবাই। রান তাড়া করতে নেমে পাকিস্তান ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল বিরাটের বেঙ্গালুরুতে খেলা ১১ কোটির বোলার ওয়ান্দু হাসারঙ্গা আর প্রমোদ মাধুসনের বোলিং দাপটে। বাবরদের দুবাই অভিযান শেষ হল ১৪৭ রানে। ২৩ রানে জিতে আট বছর পর এশিয়া সেরা শ্রীলঙ্কা। এই নিয়ে ষষ্ঠবার। ম্যাচে চার উইকেট মধুসনের। তিন উইকেট হাসারঙ্গার। সেইসঙ্গে এক বৃত্ত সম্পন্ন করে কলম্বো ফিরবেন দাসুন শনকারা। আট বছর পর এশিয়া সেরা। রাতেই রাস্তায় নেমে পড়ে কলম্বো। মধ্যরাত পর্যন্ত চলে জয়ের উল্লাস।
আক্ষরিক ভাবে এই টুর্নামেন্টে অ্যান্ড্রু ম্য়াকডোনাল্ডের ছেলেদের কাছে হারানোর কিছু ছিল না। শ্রীলঙ্কা জিততে এসেছিল, এশিয়া কাপ জিতেই ফিরল। আসলে যে ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্য়ে দিয়ে গত কয়েক মাস গিয়েছেন কুশল মেন্ডিসরা, সেই দুঃস্বপ্ন কাটতে পারত একমাত্র এই এশিয়াকাপ জয় করলেই। তাই এবার শুরু থেকে অপ্রতিরোধ্য ছিল লঙ্কাবাহিনী। বাংলাদেশে, আফগানিস্তানকে হারিয়ে সুপার ফোরে ওঠা। তারপর অপরাজিত থেকে চ্যাম্পিয়ন। ফাইনালেও ভয় ডরহীন ক্রিকেট খেলেছেন শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা। উইকেট পড়েছে, আবার রানও উঠছে। কোনও সময়ে বাড়তি সমীহ দেননি পাক বোলারদের। স্কোর বোর্ডে উজ্জ্বল হয়ে থাকল ৪৫ বলে ভানুকা রাজাপাক্ষের ৭১ রান। সঙ্গে ২১ বলে হাসারঙ্গার ৩৬ রানের অবদান।
বিরাট ব্যাটে শতরান এলেও বাবরের ব্যর্থতা কিন্তু কাটল না। এই ম্য়াচেও পাক অধিনায়ক মাত্র পাঁচ। টানলেন সেই রিজওয়ান। যিনি টি-টোয়েন্টিতে সদ্য এক নম্বর ব্যাটার হয়েছেন। তাঁর ৫৫ রানের সৌজন্যে ১৪৭ পর্যন্ত যাওয়া সম্ভব হয়েছিল পাকিস্তানের। বাকি সময়টা শুধু আসা-যাওয়ার পালা। দুবাইয়ে রবিবার এক অন্য রাত শ্রীলঙ্কার কাছে। মাথা নিচু করে নয়, এশিয়া জয় করে এবার দেশে ফেরার পালা। ম্য়াচের সেরা ভানুকা। আর সিরিজ সেরা আইপিএলের ১১ কোটির ক্রিকেটার হাসারঙ্গা।