আট বছর আগের মারাকানা। লাতিন আমেরিকা তো বটেই তামাম ফুটবল দুনিয়া ভেবে নিয়েছিল পড়শি ব্রাজিল থেকে বিশ্বকাপ নিয়ে আর্জেন্টিনা ফিরবেন লিওনেল মেসি। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে একটা জার্মান ছেলে মাঠে নেমে সব হিসাব বদলে দিয়েছিলেন। না মারাকানা থেকে আর কাপ নিয়ে আর্জেন্টিনা ফেরা হয়নি মেসির। লাতিন আমেরিকার দেশগুলির মধ্য়ে আর্জেন্টিনাই একমাত্র আট বছর আগে ফাইনালে উঠতে পেরেছিল। না হলে গত কুড়ি বছরে বিশ্বকাপ রয়েছে ইউরোপের দেরাজে। মেসি যেমন আট বছর আগে পারেননি। এবার বিশ বছর আগে মিথ ভাঙার সংকল্প করে মাঠে নেমেছেন নেইমার। দু জনেই ফ্রান্সের একই ক্লাবে খেলেন, প্যারিসের একই পাড়ায় থাকেন। কিন্তু দিনের শেষে তাঁরা দু জনেই ট্রাজিক হিরো। একজনের পাঁচটা, অন্যজনের তিনটে বিশ্বকাপ খেলা হয়ে গিয়েছে। আজ বিশ্বকাপের সেই ম্য়াচ। যেখানে একইদিনে পরীক্ষা মেসি-নেইমারের। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দু দলের পরীক্ষা নেবে ইউরোপ। আর দেখবে ফুটবল দুনিয়া।
যেদিন জুরিখের কর্তারা কাতারের সূচি তৈরি করতে বসেছিলেন, তাঁরা হয়তো স্বপ্নেও ভাবেননি, প্রথম শীত বিশ্বকাপে এমন একটা দিন আসবে, যেখানে নক-আউটের দুটি আলদা ম্য়াচ খেলতে নামবে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। ক্যালেন্ডারে আজ সেই ৯ ডিসেম্বর। যা বিশ্ব ফুটবলের কাছে এক বিরলতম দিন হয়ে থেকে গেল। ১৯৯০ সালে ব্রাজিলকে হারিয়েই সেমিফাইনালে উঠেছিল মারাদোনার আর্জেন্টিনা। আর সেটাই এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপের মঞ্চে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার শেষ ম্য়াচ। ২০ বছর আগে এশিয়া থেকে বিশ্বকাপ নিয়ে লাতিন আমেরিকা ফিরেছিলেন কাফু। ব্রাজিল হারিয়েছিল জার্মানিকে। ২০ বছর পর কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত উঠতে পেরেছে ব্রাজিল। এরমধ্যে একবার চ্যাম্পিয়নও হয়েছে জার্মানি। আর সেটা ২০১৪ সালে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে।
কাতারে এবার অনেকেই ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার মধ্য়ে মিল খুঁজে পাচ্ছে। গ্রুপের ম্য়াচে তারা দুজনেই হেরেছে। আবার ফিরেও এসেছে। পার্থক্য হল আর্জেন্টিনা দলে একটাই মেসি। ৩৬ বছর বয়সেও যিনি গোলেন্ড বুটের অন্যতম দাবিদার। আর এবার সৃজিত মুখোপাধ্য়ায়ের জুলফিকারের স্টারকাস্টের মতো। যেখানে সবাই তারা, কেউ উজ্জ্বল, কেউ টিমটিমে। প্রতিপক্ষ এবার দুজনের কড়া। ব্রাজিল খেলবে গতবারের রানার্স ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে। যাঁরা জাপানের দৌড় থামিয়ে দিয়েছে। আর আর্জেন্টিনার সামনে নেদারল্যান্ডস।