কাজানের পর কী আল-বায়েত ? ম্য়াচের বিরাশি মিনিট পর্যন্ত যখন এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, তখনই জার্মানির জন্য ত্রাতা হলেন তিনি। তিনি নিকোলাস ফুলক্রুগ। উনতিরিশ বছরের এই ফুটবলার কাতার বিশ্বকাপে এ যাত্রায় চার বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ভাসিয়ে রাখলেন। সেইসঙ্গে বার্লিনবাসীকে স্বস্তির ঘুম উপহার দিলেন। জীবনের তৃতীয় আন্তর্জাতিক ম্য়াচে গুরুত্বপূর্ণ সময় গোল করে দেশকে লজ্জার হাত থেকে বাঁচালেন ওয়েন্ডার ব্রেম্য়ানের এই ফুটবলার। এই বছরের নভেম্বর মাসে বিশ্বকাপের আগে হ্যান্সি ফ্লিকের তারকাখচিত দলে তাঁর জায়গা হয়েছে। যখন বাকি তারকারা কাতারের মাঠে ধরাশায়ী, তখন দ্বিতীয় ডিভিশন ক্লাব থেকে উঠে আসা ফুলক্রুগই এখন জার্মানির হিরো।
মাঠে ছিলেন জার্মান কিংবদন্তি লোথার ম্য়াথাউজ। দ্য গেম অফ চেস। রবিবার কাতার বিশ্বকাপে স্পেন বনাম জার্মানি ম্য়াচকে এখন এই নামেই ডাকা হচ্ছে। ২০০৮ সালের ইউরো, ২০১০ সালের বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল, সব জায়গাতেই জার্মানির পতন ডেকে এনেছিল তিকিতাকা। তাই স্পেনের এই ফুটবল দর্শনকে রুখতে জার্মান কোচ হ্যান্সি ফ্লিক প্রথম একাদশে বেশ কিছু পরিবর্তন করেন। এই ম্য়াচে তাঁর অস্ত্র ছিল বক্স টু বক্স ফুটবল। অর্থাৎ যেখানে স্পেন, তার ঠিক পিছনেই জার্মানি। তাতেও অবশ্য় ডিফেন্সের গলদ, আর মাঝমাঠের ফাঁক বেরিয়েই এল। টনি ক্রুজের ছেড়ে যাওয়া জায়গায় জুসুয়া কিমিচকে বড়ই বেমানান। ভাগ্য়িস স্প্যানিশ ডিফেন্সের ভুলে গোল পেয়েছেন ফুলক্রুগ। না-হলে জার্মানদের লজ্জার শেষ থাকত না। ওয়েন রুনি থেকে লুইস ফিগো সবার একটাই প্রশ্ন, গত চার বছরে জার্মানি করল কী ? মাত্র একটা জামাল মুশিওয়ালা। কেন এই হাইভোল্টেজ ম্য়াচে ফিট সত্ত্বেও প্রায় আশি মিনিটের মাথায় মাঠে নামানো হল লেরয় সানের মতো তারকাকে ? স্লথ হয়ে যাওয়া টমাস মুলার যে শুধু নামের ভারেই চলছেন, তা আরও একটি ম্য়াচে প্রমাণিত হল।
দু ম্য়াচে এক পয়েন্ট। গ্রুপে সবার নীচে জার্মানি। তাদের শেষ ম্য়াচ কোস্টা রিকার বিরুদ্ধে। এই গ্রুপে চার পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে স্পেন। তিন পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় জাপান। সমান পয়েন্ট পেলেও তিন নম্বরে কোস্টা রিকা। বিরাট কোনও অঘটন না ঘটলে এই গ্রুপ থেকে স্পেনের নক-আউটে ওঠা একপ্রকার নিশ্চিত। কারণ, তাদের শেষ ম্য়াচ জাপানের বিরুদ্ধে। তাহলে দ্বিতীয় দল কে ? যদি জার্মানিকে নক-আউটে উঠতে হয়, তা-হলে কোস্টা রিকা হারালেই চলবে না, জিততে হবে বিরাট ব্যবধানে। এবং সেইসঙ্গে তাকিয়ে থাকতে হবে স্পেন বনাম জাপান ম্য়াচের দিকেও।