প্রায় তিন হাজার বছর আগে গ্রিসের অলিম্পিয়া শহরে শুরু হয়েছিল বিশ্বের সবথেকে বড় এবং সবথেকে সম্মানজনক প্রতিযোগিতা অলিম্পিক্স। আর অলিম্পিক্স মানেই একটি জলন্ত মশাল। যে মশালটি জ্বালান হয় গ্রিসের প্রাচীন শহর অলিম্পিয়াতে। এরপর গ্রিস থেকে এই মশালটি বিশ্বভ্রমণ করে অলিম্পিক্স আয়োজক দেশে গিয়ে পৌঁছয়।
ওই মশাল ১৪ দিন ধরে অলিম্পিক্সের ভেনুতে জ্বালিয়ে রাখা হয়। নেভানো হয় অলিম্পিক্সের শেষ দিনে। ২০২৪ অলিম্পিক্সের মশাল ইতিমধ্যেই বিশ্ব ভ্রমণ করে পৌঁছে গিয়েছে আয়োজক দেশ ফ্রান্সে। প্যারিস অলিম্পিক্স শুরু হওয়ার আগে জেনে নিন এই চেতনার প্রতীক মশালের ইতিহাস।
তিন হাজার বছর আগে অলিম্পিক্স শুরু হয়েছিল। যুগের সঙ্গে সঙ্গে অলিম্পিক্সে আধুনিকত্বের ছোঁয়া লেগেছে। কিন্তু পরিবর্তন হয়নি এই মশাল প্রজ্বলনের রীতিতে। ইতিহাস ও পুরাণ থেকে জানা যায়, গ্রিসের অলিম্পিয়া শহরে সূর্যের আলো থেকে জ্বালানো হত এই মশাল।
রীতি অনুযায়ী, প্রথমে মাটিতে একটি আয়না রাখা হত। এই আয়নায় সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়। যা থেকে তাপের সৃষ্টি হয়। আর ওই তাপ দিয়েই মশাল জ্বালানো হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত এগারো জনের মধ্যে একজন মহিলা ওই মশাল জ্বালান। এরপর একজন ক্রীড়াবিদের হাতে তুলে দেওয়া হত এই মশাল।
৭৭৬ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে প্রাচীন অলিম্পিক্স শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই মশাল জ্বালানোর রীতিও শুরু হয়। টুর্নামেন্ট হত প্রতি চার বছর অন্তর অন্তর। কিন্তু আধুনিক অলিম্পিক্স শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় এই সংস্কৃতি। ১৯২৮ সালে ফের চালু হয় অলিম্পিক্সের মশাল প্রজ্বলন প্রক্রিয়া। এরপর ১৯৩৬ সালে বার্লিন অলিম্পিক্সে নাত্সি জোসেফ গোয়েবলসের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় অলিম্পিকে মশাল দৌড়।
পরবর্তী কালে অলিম্পিক্স মশাল দৌড় শুধুমাত্র স্থলপথে নয়,জলপথে এমনকি আকাশপথেও পৌঁছেছে বিভিন্ন দেশে। চলতি বছরের অলিম্পিক্সের মশাল আনতে গ্রিসে 'বেলেম' নামক ১২৮ বছরের পুরনো জাহাজ পাঠিয়েছিল ফ্রান্স। ১৮৯৬ সালে প্রথমবার এথেন্সে আধুনিক অলিম্পিক্সের প্রথম আসর বসে। ওই বছর ফ্রান্সের কারিগররা ওই জাহাজটি নির্মাণ করেন। তাই ঐতিহ্য বজায় রাখতে এই জাহাজটি ব্যবহার করা হয়েছে।