বিশ্বকাপ একজনের। পাঁচের দশের শেষ সময় থেকে এই ট্রেন্ডই সেট করে দিয়েছিলেন ফুটবল সম্রাট পেলে। বছরের পর বছর সেই ব্যাটন বদলেছে। ধারা কিন্তু চিরাচরিত রয়ে গিয়েছে। এই ধারাপাতেই উঠে এসেছে একাধিক নাম। সেই সরণি ধরেই এগিয়ে গিয়েছেন মারাদোনা থেকে জিদান। কিন্তু কাতার যেন আক্ষরিক ভাবে ব্যতিক্রমের কেন্দ্রবিন্দু। একজন নয়, এই বিশ্বকাপ একাধিকের। তাই ফাইনালের আগে নিয়নের আলো ভাগাভাগি হয়ে গিয়েছে দুই অবয়বের উপরে। একদিকে লিওনেল আদ্রেয়াস মেসি। অন্যদিকে কিলিয়ান এমবাপে। আজ একবিন্দু থেকেই দু জনের শুরু। নব্বই মিনিট পর একজন বিদায় নেবেন বিশ্বের মঞ্চ থেকে। অন্যজন থেকে যাবেন, তাঁর ফুটবল সাম্রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
কাতারে আসার আগে শেষ বিশ্বকাপে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন মেসি। তা থেকে তাঁকে টলানো যায়নি। টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থাকার নজির। ২৮ বছর পর কোপা আমেরিকা জয়। ঝুলি করে এই সব রূপকথাই নিয়ে এসেছিলেন দোহাতে। তাঁর প্রাচুর্যেই হয়তো ঢাকা পড়েছিল এমবাপের কাহিনি। তাই গত চার বছরে মেসিকে নিয়ে যা আলোচনা, তার এক-চুতুর্থাংশ ছিল না এমবাপকে ঘিরে। আসলে এমবাপে এখনও মেসি হয়ে ওঠেননি। এটা যেমন ঠিক, তেমনই ফরাসি এই তরুণ বরাবরই নিজের গুরু লিও মেসির দেখানো পথই অনুসরণ করেছেন। ক্লাব হোক বা দেশ, নিজের গন্ডির বাইরে যেতে চান না। থাকতে চান না কোনও বাজে চর্চার মধ্যে।
প্রশ্ন হল, আজ কে হাসবেন শেষ হাসি ? একজন মুকুটহীন সম্রাট। অন্যজন তারুণ্যের যুবরাজ। লুসাইল ইতিমধ্যেই তাল ঠুকতে শুরু করেছে। মেসি বনাম এমবাপে। নিঃসন্দেহে মিথ ভাঙল কাতার। বিশ্বকাপ আর একার নয়। প্রমাণ করলেন ৩৫ বছরের লিও মেসি। আর ২৩ বছর ১১ মাস ৩৬৩ দিনের মাথায় দাঁড়িয়ে থাকা কিলিয়ান এমবাপে। অপেক্ষা শেষ বাঁশি বাজার।