সারি সারি কালো পলিথিনে ভারী কিছু ফেলা হচ্ছে অনবরত। একটার ওপর এসে পড়ছে আরেকটা। ঝোরো হাওয়ায় পলিথিন উড়ে উঁকি দিচ্ছে একটা হাত, কখনো রক্তাক্ত মুখ। ইউক্রেনের বুচা (Bucha Video) শহরের বীভৎস এই ভিডিও দেখে থমকে আছে গোটা পৃথিবী। এক সময় যা শহরের বাগান ছিল, সেখানেই এখন মাটি খুঁড়ে কবর দেওয়া হচ্ছে দেহগুলোকে। কারণ কবরখানায় আর জায়গা নেই।
ইউক্রেনের সরকারি হিসেব বলছে রাজধানী কিয়েভের বাইরে বুচা সহ অন্যান্য শহর থেকে ৪১০ টি দেহ উদ্ধার হয়েছে।
ইউহানের চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতি! চিনের সাংহাইতে আড়াই কোটির বেশি মানুষ ঘর বন্দি
গত সপ্তাহে ইউক্রেনের মাটি ছেড়ে নিজ দেশে ফিরেছে রুশ সেনাবাহিনী (Russian Troop)। তারপর থেকেই যুদ্ধ বিধ্বস্ত বুচার একের পর এক ছবি- ভিডিও সামনে আসছে। লজ্জায় মাথা হেট বিশ্ব মানবতার। রাস্তার উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে দেহ। পচা দুর্গন্ধে ক্রমে বাতাস ভারী হচ্ছে। গোলাবারুদের দগদগে ক্ষত চারপাশে। ইউক্রেনের রাজধানী কিভ থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের বুচা শহর যেন জলজ্যান্ত এক মৃত্যুপুরী।
রাজধানী কিভের কাছেই বুচা শহর। বুচা, ইরপিন হয়ে কিভের দিকে এগোচ্ছিল দীর্ঘ রুশ কনভয়। বেশ কিছু দিন এই দুই শহর দখল করেছিল তারা। ৩০ মার্চ নাগাদ শহর ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার আগে রুশ বাহিনী এই হত্যাকাণ্ড চালায় বলে অভিযোগ। তার পরই বুচা শহরে গিয়েছিলেন জ়েলেনস্কি। নিজে চোখে দেখে এসেছেন ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা দেহের সারি। তাঁর সন্দেহ , বহু মানুষকে গণকবর দিয়ে গিয়েছে রুশরা।
কোথাও দেখা গিয়েছে একটি গাড়ির মধ্যেই পুরো পরিবারের নিথর, গুলিতে ঝাঁঝরা দেহ। সম্ভবত পালানোর চেষ্টা করছিল পরিবারটি। কিন্তু রুশ বাহিনীর বুলেট শরীরগুলিকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে।
২০২২! বিগত দু'বছর ধরে অতিমারীতে ধুকতে থাকা একটা পৃথিবী স্বপ্ন দেখছিল নতুন করে শুরু করার। ক্লান্ত, অবসন্ন দুটো বছর কাটিয়ে একটু একটু করে ক্ষত ভুলছিল মানুষ। নতুন বছরে ওঠা প্রথম সূর্য জানত না, সামনেই আরও ভয়ঙ্কর দিন। ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে হাতে হাত রাখা যায়, কিন্তু মানুষই যখন লড়ে মানুষের বিরুদ্ধে? দেশ, আরেক দেশের বিরুদ্ধে? এক মাস ধরে চলল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ! খবরের কাগজে, টিভিতে, সোশ্যাল মিডিয়ায় রোজ ভয়াবহতার নতুন ছবি। রক্ত-কান্না-হাহাকার-মৃত্যু মিছিল। সদ্য অতিমারী পেরনো পৃথিবী আরও রিক্ত হল। মানবতার ক্ষয় হল আরও অনেকখানি।