কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার সাথে সাথেই ভারতের সামনে সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণ। চূড়ান্ত অক্সিজেন সংকট সর্বত্র। এই ঘাটতি পূরণ করার অনেক পদ্ধতি নিয়েই আলোচনা করছে কেন্দ্র। যেমন সব জেলায় অক্সিজেন প্লান্ট বসানো। তবে সে সব বেশ সময় সাপেক্ষ, অন্তত ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ সময় তো লাগবেই। এই মুহূর্তে অক্সিজেন সংকট একটু কমানোর জন্য কী করা যেতে পারে?
ভারতে এমন প্রচুর শিল্প রয়েছে, যেখানে বাই প্রডাক্ট হিসেবে অক্সিজেন উৎপাদন হয়। তবে একটা স্টিল কারখানায় যে পরিমাণ অক্সিজেন উৎপাদন হয়, তার ৯৩% বায়বীয়, ৭ % তরল। এই তরল অক্সিজেনই চিকিৎসার কাজে লাগে। সব মিলিয়ে ভারতে ১ লক্ষ মেট্রিক টন অক্সিজেন উৎপন্ন হয়, যার মধ্যে মাত্র ৭৫০০ মেট্রিক টন চিকিৎসায় ব্যবহার যোগ্য।
দিন পনের আগে কেন্দ্র বলেছিল, ৬,৬০০ মেট্রিক টন অক্সিজেন বরাদ্দ করা হয়েছে কোভিড চিকিৎসার জন্য। সে সময়, দেশে প্রয়োজন ছিল ৩,৮০০ মেট্রিক টন। সংক্রমণের হার বাড়ার সাথে সাথে চাহিদা বাড়তে শুরু করল অক্সিজেনের। কেন্দ্র আদালতকে জানাল, এবার চাহিদা বেড়ে ৮০০০ মেট্রিক টন।
এবার দেশের একেক রাজ্যে অবস্থিত একেক শিল্প থেকে বিভিন্ন পরিমাণে তরল অক্সিজেন উৎপন্ন হচ্ছে। মহারাষ্ট্রে ১,৭৮৪ মেট্রিক টন, গুজরাটে ৯৭৫ মেট্রিক টন, উত্তরপ্রদেশে ৮৫৭ মেট্রিক টন, আবার কর্নাটকে ৮০২ মেট্রিক টন। এবার সমস্যা কোথায়? সমস্যা পরিবহণের। তরল অক্সিজেন পরবহনে দরকার হয় খুবই দামি ট্যাঙ্কার, যা বিপুল খরচ সাপেক্ষ। তারপর আসে অক্সিজেন সংরক্ষণের সমস্যা। ট্যাঙ্কার পাওয়া না গেলে অক্সিজেন থাকলেও তা চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
দ্বিতীয় সমস্যাটি হল আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকা। এই মুহূর্তে সংক্রমিতের সংখ্যা অনুযায়ী দেশে অক্সিজেনের যোগান দেওয়া সম্ভব হলেও সংক্রমণের হার বলছে অদূর ভবিষ্যতে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেবে। তখন একমাত্র উপায় বিদেশ থেকে অক্সিজেন আমদানি।
এই মুহূর্তে সবচেয়ে আগে দেখা দরকার কোন কোন হাসপাতালে অক্সিজেন সত্যিই নেই, সেই মতো ট্যাঙ্কার পৌঁছনোটাও নিশ্চিত করা দরকার কেন্দ্রের।